এটা গতবারের কথা - সেই যে সাড়ে সাত দিনের জন্যে কলকাতা গেলাম, সেই বারের। নানা মজারু ঘটনা চলেই থাকে, সেসব আগে বলেছি, এটা ভুলে গেছিলাম। অতএব...
বিদেশে ফেরার আগের দিনের কথা, শুক্রবার। রাত্রে মা আমি বনি খেতে বসেছি, পিঙ্গু লেজ এলিয়ে হাসিমুখে টিভিতে সিরিয়াল দেখছে। তখন ওই রান্নার গ্যাস নিয়ে নানা ঝামেলা শুরু হয়েছে, ৯/৬ কেস।
খেতে খেতে মা খুব চিন্তান্বিত হয়ে বলল " এবার থেকে মাইক্রোওয়েভ বেশি বেশি ব্যবহার করব।"
আমি খুশি হয়ে - " এই তো, কম তেলে রান্না, মাইক্রোওয়েভ, এ সব খুব ভালো, শরীর ভালো থাকে"
মা রেগে গিয়ে - " কম তেলের কথা হচ্ছে না, গ্যাস সিলিন্ডার ৬টা মাত্র দেবে জানিস না? কোন দেশে যে থাকিস? "
বনি - " দিদিভাই আমেরিকায় থাকে মা, তুমি ভুলে গেছ? "
মা পাত্তা না দিয়ে গজগজ করতে থাকল - " এতগুলো লোকের রান্না গ্যাসে, দুদিনেই তো ফুরিয়ে যাবে। তারপর আবার সুমিত্রা তোয়ালে বালিশের ঢাকা সব সোডা দিয়ে গরম জলে ফোটায়..."
আমি - " ওগুলো তাহলে মাইক্রোওয়েভ এ দিয়ে দিও, একদম ফটফটে সাদা হয়ে যাবে..."
মা - " ইয়ার্কি মারিস না, তুই তো রান্না করিস ঘোড়ার ডিম, তুই কি বুঝবি একটা এতবড় সংসার চালাতে কত চিন্তা করতে হয়..."
বনি - " মা তুমি একটা সোলার কুকার কেনো। সক্কালবেলা সুনীতা ছাদে ভাত ডাল ডিম সব সেদ্দ করতে দিয়ে আসবে, দুপুরের মধ্যে সব ফিনিশ..."
আমি - " অথবা তিন চারটে সোলার কুকার নিয়ে মা সুনীতা সুমিত্রাদি শম্পা সবাই বিবেকানন্দ পার্কে গিয়ে লাইন দিয়ে বসিয়ে রাখবে, একটা কাকতাড়ুয়া সেট করে পাশে..."
বনি - " আর যেদিন যেদিন মেঘ করবে, সেদিন সবার উপোষ। আর বর্ষাকালটা তো মুড়ি খেয়েই কাটাতে হবে, এক দেড় মাস সূর্য উঠবেনা, সোলার কুকারো চলবে না...তখন বরং আমরা হাতারি থেকে খাবার আনাব, কি বল দিদিভাই? "
সেদিন রাত্রে মাকে আর ফারদার ঘাঁটাই নি :)