ইতিহাস জামাইষষ্ঠী নিয়ে আদিখ্যেতা করলেও গুনিজন মাত্রেই জানেন যে ষষ্ঠীপুজোর রকমফের আছে, যথা নীল, জামাই, শীতল ও অন্যান্য। আমাদের বাড়িতে জুনমাসের যে ষষ্ঠীপুজো হয়, সেটায় পুজো এলিমেন্ট কম, পার্বন বেশি। আর সেদিন জামাই বলে নয়, বাড়ির সব সন্তানরাই আদর পেয়ে থাকে। আর ব্যাপারটা যেহেতু গরমের ছুটির মধ্যে, তাই পড়াশোনা নিয়ে সেদিন বা তার আগের দিন বা তার পরের দিন বিশেষ মাথা না ঘামালেও চলে। অতএব, জুন-ষষ্ঠী আমাদের কাছে খুবই আকর্ষক একটা দিন ছিল। বড় হয়েও আকর্ষণ কমে নি, কিন্তু ছোটবেলার স্মৃতিগুলো বেজায় ভীড় করছে...
দিন চারেক আগে থেকে রং মিলিয়ে মিলিয়ে নতুন জামাপত্র কিনে রাখা হলো, দিদুর অর্ডারে। আমাদের বোনেদের ফ্রক, ভাইএর পাঞ্জাবি, মামা আর বাবার টিশার্ট, মা মামীর শাড়ি, গৌরদার ফতুয়া।আগের দিন রাত্রে মামী কাউনের চাল ভিজিয়ে রাখল, আর খইএর মোয়াতে পাক দেওয়া হলো - তার গন্ধে আমাদের প্রাণ উদাস। আমরা ভাইবোনেরা অজস্র কাঁঠাল পাতা ছেঁটে রাখলাম, আর খাবার ঘরের সাইডবোর্ডে নতুন সুতো, হলুদ, ফুল, বেলপাতা, দুব্বো, ফল, মিষ্টি, কাঁচি এইসব সারসার সাজিয়ে রাখা হলো। গৌরদা যাদবদাস থেকে দই এনেছে, আর লেবু সন্দেশ। মামা এনেছে কালোজাম কাঁঠাল আম লিচু জামরুল, ইলিশ / পাবদা, নারকোল। বাবা মনোহর পুকুর রোড এর সেই স্পেশাল দোকান থেকে মাংস এনেছে, সেটা পরের দিন রাত্রে খাওয়া হবে। এলার্ম দিয়ে শুলাম, ভোরে উঠে মাদার ডেয়ারী-ওয়ালাকে ধরে দু প্যাকেট দুধ বেশি নিতে হবে, ক্ষীর তৈরী হবে। (কিড়িং করে এলার্ম হয়ত বেজেছিল, আমরা উঠি নি। বিপত্তারিনি মামী কিম্বা গৌরদাই দুধ কিনে, বড় পেতলের কড়ায় ক্ষীর করতে বসিয়ে দিয়েছিল)
আমাদের উঠতে উঠতে মা দের চানটান সারা, চুল-ধোয়া জল বাটিতে রাখা হয়েছে, করমচা ধান বাঁশের-কুড়ুল দুর্বা দিয়ে পুঁটলি বাঁধা হয়েছে, হাতপাখার ওপর সেই পুঁটলি, বড় আম, আর জলের বাটি রাখা হয়েছে । ঠাকুরঘর থেকে তিনতলার বড়ঘরে প্রদীপ, পিলসুজ, কাঁসর, ঘন্টা, শাঁখ, পুষ্পপাত্র, কোশাকুশি, পাথরের থালা বাটি গেলাস সব আনা হয়েছে। আল্পনা আঁকা শেষ, তার ওপর বড় পিঁড়ি বসানো হয়েছে, ভানুদি, মনিদি, মলিনাদি সবাই খুব ব্যস্ত রান্নাঘরে - নারকোল নাড়ু, তিলের তক্তি, আরো নানান্ খানা তৈরী হচ্ছে। বারো আনা কাজই শুরু হয়ে শেষ হতে চলেছে।
তাতে অবশ্য আমাদের কিছু এসে যায় না কারণ আমরা ছোটো। কাজেই চা-টা খেয়ে চান করে নতুন জামাকাপড় পরে ছোটোদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।চন্দন বাটা, পঞ্চপ্রদীপের সলতে সাজানো, লিচু ছাড়ানো, কালোজাম-আম-জামরুল কাটা, (দু-একটি খাওয়া) আর চালের গুড়ো-ময়দা দিয়ে মা ষষ্ঠী র পুতুল তৈরী করা।
(পরের কিস্তি এখানে : http://bokombokom.blogspot.com/2013/06/blog-post_16.html)
দিন চারেক আগে থেকে রং মিলিয়ে মিলিয়ে নতুন জামাপত্র কিনে রাখা হলো, দিদুর অর্ডারে। আমাদের বোনেদের ফ্রক, ভাইএর পাঞ্জাবি, মামা আর বাবার টিশার্ট, মা মামীর শাড়ি, গৌরদার ফতুয়া।আগের দিন রাত্রে মামী কাউনের চাল ভিজিয়ে রাখল, আর খইএর মোয়াতে পাক দেওয়া হলো - তার গন্ধে আমাদের প্রাণ উদাস। আমরা ভাইবোনেরা অজস্র কাঁঠাল পাতা ছেঁটে রাখলাম, আর খাবার ঘরের সাইডবোর্ডে নতুন সুতো, হলুদ, ফুল, বেলপাতা, দুব্বো, ফল, মিষ্টি, কাঁচি এইসব সারসার সাজিয়ে রাখা হলো। গৌরদা যাদবদাস থেকে দই এনেছে, আর লেবু সন্দেশ। মামা এনেছে কালোজাম কাঁঠাল আম লিচু জামরুল, ইলিশ / পাবদা, নারকোল। বাবা মনোহর পুকুর রোড এর সেই স্পেশাল দোকান থেকে মাংস এনেছে, সেটা পরের দিন রাত্রে খাওয়া হবে। এলার্ম দিয়ে শুলাম, ভোরে উঠে মাদার ডেয়ারী-ওয়ালাকে ধরে দু প্যাকেট দুধ বেশি নিতে হবে, ক্ষীর তৈরী হবে। (কিড়িং করে এলার্ম হয়ত বেজেছিল, আমরা উঠি নি। বিপত্তারিনি মামী কিম্বা গৌরদাই দুধ কিনে, বড় পেতলের কড়ায় ক্ষীর করতে বসিয়ে দিয়েছিল)
আমাদের উঠতে উঠতে মা দের চানটান সারা, চুল-ধোয়া জল বাটিতে রাখা হয়েছে, করমচা ধান বাঁশের-কুড়ুল দুর্বা দিয়ে পুঁটলি বাঁধা হয়েছে, হাতপাখার ওপর সেই পুঁটলি, বড় আম, আর জলের বাটি রাখা হয়েছে । ঠাকুরঘর থেকে তিনতলার বড়ঘরে প্রদীপ, পিলসুজ, কাঁসর, ঘন্টা, শাঁখ, পুষ্পপাত্র, কোশাকুশি, পাথরের থালা বাটি গেলাস সব আনা হয়েছে। আল্পনা আঁকা শেষ, তার ওপর বড় পিঁড়ি বসানো হয়েছে, ভানুদি, মনিদি, মলিনাদি সবাই খুব ব্যস্ত রান্নাঘরে - নারকোল নাড়ু, তিলের তক্তি, আরো নানান্ খানা তৈরী হচ্ছে। বারো আনা কাজই শুরু হয়ে শেষ হতে চলেছে।
তাতে অবশ্য আমাদের কিছু এসে যায় না কারণ আমরা ছোটো। কাজেই চা-টা খেয়ে চান করে নতুন জামাকাপড় পরে ছোটোদের কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম।চন্দন বাটা, পঞ্চপ্রদীপের সলতে সাজানো, লিচু ছাড়ানো, কালোজাম-আম-জামরুল কাটা, (দু-একটি খাওয়া) আর চালের গুড়ো-ময়দা দিয়ে মা ষষ্ঠী র পুতুল তৈরী করা।
(পরের কিস্তি এখানে : http://bokombokom.blogspot.com/2013/06/blog-post_16.html)
আবার সাসপেন্স-এ রাখা কেন বাপু!! গপ্পটা তাড়াতাড়ি ছাড়্ মা!
ReplyDeleteEi to, hoye geche
Deleteগত সপ্তাহের শুরু থেকেই আমি তোমার কাছ থেকে (specially তোমার থেকেই) একটা লেখা এবং এই বিষয়ের উপরেই লেখাটাই চাইছিলাম। এধরণের লেখা তোমার হাতে এত ভাল আসে! বাকিটুকু লিখতে বেশি দেরী কোরোনা যেন। মনে হচ্ছে আমার টেলিপ্যাথির বেশ জোর আছে।
ReplyDeleteMani, tomar sathe amar telepathy ache, eta to shorbojonbidito shotto :)
Deletehttp://bokombokom.blogspot.com/2013/06/blog-post_16.html
ReplyDeleteদারুণ লেখা শকুন্তলা। একেবারে ছবির মত ফুটে উঠেছে। খুব ভালো লাগল। থ্যাংক ইউ।
ReplyDeleteThank you Kuntala. Tomar Father's Day lekha ta porlam. Golar kach ta dola moto hoye ache.
Delete